জ্যোতিষীরা কিভাবে মানুষের শুভাশুভ লিখে থাকেন

প্রকৃতির নিয়মানুসারে জৈবিক শুক্রকিট যখন মাতৃগর্ভে স্থিতি লাভ করে ৮০ দিনে উপনিত হয়ে রক্তপিণ্ডে পরিণত হয়, তখন আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন দুজন ফেরেস্তার দ্বারা রক্তপিন্ডে রুহ ফুৎকার করে পূর্ণাঙ্গ মানব জীবন দান করেন এবং ফেরেস্তার মাধ্যমে ভাগ্যলিপি লিপিবদ্ধ করেন। কত দিন পরমায়ু পাবে, কি প্রকারের কত রুজি পাবে, কোন কর্মের মাধ্যমে তার রুজি-রোজগারের সমস্যা সমাধান হবে, কত দিন সুস্থ্য থাকবেন, কতদিন অসুস্থ থাকবেন ও কি কি প্রকারের অসুস্থতায় ভুগবেন, কতটা ভাল ও মন্দ কাজ করবেন, আরাম-আয়েশ কতটুকু ভোগ করবেন, সমস্ত জীবনের পরিসমাপ্তিতে সৌভাগ্যবান হবেন না কি দুর্ভাগ্যবান হবেন সমস্ত কিছুই লিপিবদ্ধ করে দেন। যাহা ভাগ্যলিপি নামে পরিচিত। মানব সন্তান পৃথিবীতে আগমনের শুরু থেকেই ষোড়শবর্গের সীমাবদ্ধতায় ও নভোমন্ডলের গ্রহ-নক্ষত্রের আকর্ষণ-বিকর্ষণের ফলাফলের কারণ পূর্বলিখিত ভাগ্যলিপি।


আল্লাহ্‌ পরোয়ারদেগারে আলম কোন মানবকে এই ভাগ্যলিপির বর্হিভূত করেন নাই। এই ভাগ্যলিপির অনুসারেই মানব সন্তানের শারিরীক আকৃতি, প্রকৃতি, স্বভাব, চরিত্র প্রকাশের প্রতিটি চিহ্নই শরীরের বিভিন্নস্থানে রেখাপাতের দ্বারা, তিল চিহ্নের দ্বারা ও অন্যান্য বিভিন্ন চিহ্নের দ্বারা অংকিত থাকে। জ্যোতিষীগণ ঐ চিহ্নের হিসাব ধরেই অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বর্ণনা করেন। পক্ষান্তরে মানব সন্তান যে দিন যে স্থানে যে সময় ভূমিষ্ট হয়ে থাকেন ঐ দিন ঐ স্থানের ঐ সময়ের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ অনুসারে মহাকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের গতি অনুসারে হিসাবের মাধ্যমে কোষ্ঠী করে সারাজীবনের ফলাফল লিপিবদ্ধ করে থাকেন। কেননা বিভিন্ন গ্রহ নক্ষত্রের গতি ও স্থানান্তর আল্লাহর নির্দেশেই হয়ে থাকে। জন্মকালীন গ্রহ নক্ষত্রের অবস্থান এবং বর্তমান সময়ের গ্রহ নক্ষত্রের শুভাশুভ অবস্থান বিচার করে অশুভ প্রভাবের প্রতিকার বর্ণনা করে থাকেন এবং প্রতিকারের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন।


কার্যকারীভাবে এই ব্যবস্থাপত্র সঠিক হলেই গ্রহ-নক্ষত্রের অশুভ প্রভাব থেকে বাস্তব ক্ষেত্রে সুপ্রভাবের ফলাফল লাভ করা যায়। সুতরাং প্রতিটি মানুষের চিন্তা করার প্রয়োজন যে জ্যোতিষ শাস্ত্র অলৌকিক এবং গুপ্তবিদ্যা নয়, উপরন্তু যে কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তি এই শাস্ত্রের একাগ্রচিত্তে চর্চা করলে শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম এই জন্য যে এই শাস্ত্রের মূল ভিত্তি হলো গ্রহ-নক্ষত্রের গতি, স্থানান্তর বা রাশি পরিবর্তন। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন যে প্রতিটি গ্রহ একই গতিতে ঘুরে না, গ্রহানুসারে ঘুর্ণায়মান গতি ভিন্ন ভিন্ন। এই ভিন্ন ভিন্ন গতিকে অংকের মাধ্যমে ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে হিসাব করেই কোষ্ঠী প্রস্তুত করতে হয়। বিশেষতঃ এই পদ্ধতি অবলম্বন করে জ্যোতিষীগণ মানবের শুভাশুভ নির্ণয় করে থাকেন।

0 comments:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন